মৃত্যুক্ষুধা - গল্পের পেছনের গল্প


 

বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের পরে আর যে মনীষী ব্যক্তিটি তাঁর নিজস্ব প্রতিভার আলোকে সাহিত্যাকাশ আলোকিত করে গেছেন তিনি হলেন কাজী নজরুল ইসলাম। বিদ্রোহী কবি হিসেবে আমাদের কাছে তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত হলেও বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। মূলত কবি হিসেবে আমাদের কাছে তিনি সমাদৃত হলেও তাঁর কালজয়ী কিছু উপন্যসাও রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে মৃত্যুক্ষুধা অন্যতম। মৃত্যুক্ষুধা উপন্যাসকে নজরুল সাহিত্যের অন্যতম সেরা কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই উপন্যাসের রচনার পেছনে রয়েছে লেখকের বাস্তব জীবনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা।




বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী উপন্যাস 'মৃত্যুক্ষুধা'। ১৯২৬ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত তিনি কৃষ্ণনগরে বাস করতেন। এ নগরের চাঁদসড়কের ধারে বিরাট কম্পাউন্ডওয়ালা একতলা বাংলোয় থাকতেন তিনি। উপন্যাসের পটভূমি উক্ত বাড়ি, রোমান কাথলিক পাড়া এবং কলতলার পারিপাশ্বিক ঘটনা এবং সময়কে কেন্দ্র করে রচিত। কৃষ্ণনগরে অবস্থানকালে নিদারুণ দুঃখ-কষ্ট এবং দুঃসাধ্য কৃচ্ছ্রসাধন ছিল নজরুলের নিত্য জীবনযাত্রার অঙ্গ। দারিদ্রের চিত্র, সাম্য ও বিপল্গবীচেতনা এ উপন্যাসের রূপকল্পের সঙ্গে তাই অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। মৃৎশিল্পের কেন্দ্রভূমি কৃষ্ণনগরের চাঁদসড়কের ধারে বাস করা দরিদ্র মুসলিম পরিবারের কয়েকজন সদস্যের জীবনে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনার মধ্য দিয়ে উপন্যাসের শুরু।
মূলত ব্যক্তি জীবনের দারিদ্র্যক্লিষ্ট জীবন পাশাপাশি নিজের আশেপাশের দারিদ্র্যপীড়িত ভাগ্যাহত মানুষগুলোর কষ্ট কবি নজরুলের সচেতন চিত্তে নাড়া দিয়েছিলো। এবং নিজ চোখে দেখা এই নির্মম সত্যকে শিল্প সত্য হিসেবে তুলে ধরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের উপহার দিলেন " মৃত্যুক্ষুধার মতো কালজয়ী উপন্যাস।

Comments

Popular posts from this blog

মুক্তিযুদ্ধের বই - ০৪

মুক্তিযুদ্ধের বই - ০১

মুক্তিযুদ্ধের বই - ০২